শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১০ অপরাহ্ন
অজান্তে_আমরা_কত_মানুষকে_কষ্ট_দেই
ডেক্স প্রকাশ / ঢাকার কন্ঠ
৭ বছর একটিও কথা বলেননি, চুলদাড়ি কাটেননি! নিজেকে বন্দি করেছিলেন জংগলে ভরা এক পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে! কালচারাল ইউনিট ক্লাবের ছেলেরা বা পাশের কোনো পরিবার খাবার দিলে কিছু জুটত নতুবা ভুখা থাকত টানা কদিন সেটা কে জানে!
স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা (যাদের জন্য উনি বেচে আছেন) খবর দেয় মানবিক মুখকে। ঘটনায় শিউড়ে উঠি আমরা কারন উনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন। তাহলে কিভাবে এইঘরে কিভাবে কাটালেন এভাবে এতদিন? জংশনের কালচারাল ইউনিট ক্লাবের সদস্যরা এবার মানসিক জোড় পান(বলা ভাল শান্তি পান)
উদ্যোগ নিয়ে তার চুলদাড়ি কাটানো হোল, স্নান করানো হল, নতুন জামাকাপড় পড়ানো হতেই, নিজের শরীরে মনে কয়েকদশক পর স্নেহের হাত ছুতেই চোখে জল নিয়ে উনার ইতিহাস আর দু:খের কাহিনী বলা শুরু করলেন,” আমার নাম রমনী দাস, বয়স ৭৬, বাড়ি এই পাশেই ছিল।
ছেলেরা (যার একজনের নাম ইন্দ্রজিত দাস) বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে টাকা নিয়ে বাবাকে ফেলে দিয়ে বাস করছেন আসাম জাগীর রোড এ পেপার মিল সংলগ্ন নিজ বাড়িতে। উনার বউ আসাম এক মুহুরিরর বাড়িতে বাস (?) শুরু করেন উনাকে ছেড়ে দিয়েই।
এরপর থেকেই উনি আশ্রয়হীন! ছেলে গ্রহন করেন না!
স্টেশনে বা অন্য কোথাও কাটিয়েছেন।
তাই মানবিক মুখের সদস্য মৌসুমী ভট্টাচার্য, বাপি দে, শেখর দারা তাকে বললেন, ” বাবা আশ্রমে থাকবেন।”
উনার উত্তর, ” যেখানে পাঠাবেন সেখানেই থাকব কিন্তু কেও বলবেনাতো ‘এই বুড়া এখান থেকে যা?’ ” আসলে এই তিরস্কারের (আমরা কত ভবঘুরেকে এভাবে ভাগাই) ভয়েই আত্মসম্মান পুর্ন সুস্থ মানুষটি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ৭ বছর।
উদ্যোগ শুরু হল তাকে সাজুদার আশ্রমে পাঠানোর। বাবা ধন্যবাদ দিচ্ছে চোখের জলে কারন যাকে নিজের ছেলেরা ত্যাগ করেছেন কিন্ত অপরিচিতরা হয়ত শেষলগ্নে স্নেহের পরশ দিলেন।
ক্লাবের সদস্যরা মন খারাপ হলেও শান্তি পেলেন।
কিন্ত শেষে দুটি প্রশ্ন যারা পড়লেন তাদের জন্য…
১;এরকম সন্তানের জন্ম কেন হয় জগতে যারা বাবাকে অস্বীকার করেন?
২; আমরা কি আর কোন কাওকে বলব, “এই বুড়া ভাগ এখান থেকে!”?????